বিশ্বকাপ মানেই যেন উৎসবের আমেজে একসাথে মেতে উঠে পুরো বিশ্ব। আর তা যদি হয় ফুটবল বিশ্বকাপ তাহলে তো কথাই নেই। কেনানের ‘ওয়েভিং ফ্ল্যাগ’ কিংবা শাকিরার ‘ওয়াকা ওয়াকা’ – ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই অন্যরকম এক উত্তেজনা। বিশ্বকাপে কোন দল ফেভারিট, মাস ঘুরে কোন দেশের হাতে উঠবে বিশ্বকাপ তা নিয়ে চায়ের কাপে উঠে বিতর্কের ঝড়।
১৯৩০ সালে শুরু হওয়া ফুটবল দুনিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিযোগিতাটির ২২তম আসর আগামী ২০ নভেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাতারে অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর ৩২টি দল একটি গোল্ডেন ট্রফির জন্য একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। কাতারের পাঁচটি শহরের ৮টি স্টেডিয়ামে মোট ৬৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ফুটবল বিশ্বকাপ দীর্ঘ ৯২ বছর ধরে ফুটবলপ্রেমীদের আগলে রেখেছে একই পতাকার নীচে। বর্তমানে ফুটবল প্রেমীদের সংখ্যাটিও ছাড়িয়েছে ৩৫০ কোটি। ৯০ মিনিটের একটি খেলায় টান টান উত্তেজনায় দর্শকদের চোখ নিবদ্ধ থাকে টেলিভিশনের পর্দায়।
আপনাদের কি মনে হয়, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো হাত ছাড়া করবে ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং এত বড় সুযোগ? মোটেও না। আর আজকের আমরা আলোচনা করব ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপের আয়-ব্যয় সহ কোন প্রতিষ্ঠানগুলো স্পন্সর হিসেবে আয়োজনটিতে যুক্ত হচ্ছে এবং কী কী সুবিধা পাচ্ছে তারা ফিফার কাছ।
যেনতেন আয়োজন নয়, চার বছর পরপর বেশ জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে পর্দা তোলে ফিফা বিশ্বকাপ। এর জন্য ব্যয় হয় বড় অঙ্কের টাকাও। প্রতিযোগিতার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ফিফার সাথে অংশীদার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
এইবার ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ এর বিপরীতে ফিফা কমিটির এ থেকে প্রাপ্ত মোট রাজস্ব আয় হবে ৪৬৬ কোটি ৬০ লক্ষ মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। এই রাজস্ব মূলত পাঁচটি খাত থেকে আসবে। মোট রাজস্বের ২৬৪ কোটি আসবে টেলিভিশন সম্প্রচারসত্ত্ব বিক্রয় করে, ১৩৫ কোটি ৩০ লক্ষ বা ২৯ শতাংশ আসবে স্পন্সরশীপ আয় (বিপণন অধিকার) থেকে এবং বাদবাকি ১৫ শতাংশ আসবে আতিথেয়তা বা হসপিটালিটি রাইট এবং টিকিট বিক্রয়, লাইসেন্সিং অধিকার থেকে যার পরিমাণ বর্তমানে ৬৭ কোটি ৩০ লক্ষ মার্কিন ডলার। তাহলে বুঝতেই পারছেন, ফিফা কমিটির মত আয়ের বেশির ভাগই বিশ্বকাপের অবদান।
- ৫৬ শতাংশ আসবে টেলিভিশন সম্প্রচারসত্ত্ব
- ২৯ শতাংশ আসবে স্পন্সরশীপ আয় থেকে
- ১৫ শতাংশ আসবে হসপিটালিটি রাইট, টিকিট বিক্রয় ও লাইসেন্সিং অধিকার থেকে
এতো গেল ফিফার আয়-ব্যয়ের হিসাব। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন প্রতিষ্ঠানগুলো পাচ্ছে ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ স্পন্সর করার সুযোগ। সেই সাথে কোন প্রতিষ্ঠান কেমন বিনিয়োগ করছে এবং কি কি সুবিধা পাচ্ছে তা নিয়েও করবো খুঁটিনাটি আলোচনা।
ফিফার রয়েছে বিভিন্ন স্তরের স্পন্সরশীপ। ফিফা অংশীদার, ফিফা বিশ্বকাপ স্পন্সর এবং আঞ্চলিক স্পন্সর রয়েছে আপাতত এই তিন স্তরে তারা স্পন্সরদের সাথে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। ভবিষ্যতে আরো কয়েক পর্যায়ের স্পন্সরশীপের চুক্তিতে যাবে ফিফা।
বর্তমানে সাতটি ফিফা অংশীদার রয়েছে যারা ফিফার গ্লোবাল রাইটস সংরক্ষণ করে এবং পুরো টুর্নামেন্টে ফিফার ব্র্যান্ডিং ব্যবহার করতে পারবে। এর মধ্যে রয়েছে-অ্যাডিডাস, কোকা কোলা, হুন্দাই/কিয়া মোটরস, কাতার এয়ারওয়েজ, কাতার এনার্জি এবং ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস কোম্পানি ভিসা।
ফিফা বিশ্বকাপ স্পন্সর
দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে বিশ্বকাপ স্পন্সর। এই স্পন্সর প্রতিষ্ঠানগুলোও গ্লোবাল রাইটস সংরক্ষণ করে তবে তা শুধু বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টে সীমাবদ্ধ। বাডওয়েজার, বাইজুস, ক্রিপ্টো ডট কম, ম্যাকডোনাল্ডস, মেংনিউ ডেইরি, ভিভো হলো অন্যতম কয়েকটি স্পন্সর।
আঞ্চলিক স্পন্সর
অঞ্চলভিত্তিক প্রচারণার স্বত্বাধিকারের জন্য ফিফা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে থাকে। মূলত ৫টি মহাদেশীয় অঞ্চলের প্রতিটি থেকে সর্বোচ্চ ৪টি প্রতিষ্ঠানকে এই স্বত্বাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে। এবার যেমন আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের রয়েছে GWC- সাপ্লাই চেইন সলিউশন কোম্পানি, উত্তর ও মধ্য আমেরিকার Frito-lay -স্ন্যাক ফুড কোম্পানি যারা বহুল পরিচিত লেইস, ডোরিটোস, চিটোস এসকল চিপসের প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান; দ্যা লুক কোম্পানি যারা ভিজুয়াল সলিউশন প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান এবং অ্যালগোর্যন্ড যারা একটি ব্লকচেইন সলিউশন প্রতিষ্ঠান। আর দক্ষিণ আমেরিকাতে নুব্যাঙ্ক – আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান অন্যতম।
লোচনার এই পর্যায়ে চলুন দেখে নেওয়া যাক কোটি কোটি টাকার স্পন্সরশীপের বিপরীতে ফিফা, প্রতিষ্ঠানগুলোকে কি কি সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে।
ফিফা তার স্পন্সরদের ‘স্ট্যান্ডার্ড রাইট প্যাকেজ’ সুবিধা দিয়ে থাকে যেখানে
- স্পন্সররা ফিফার মার্কস বা লোগো ব্যবহার করার সুযোগ পাবে;
- ফিফার সমস্ত অফিসিয়াল প্রকাশনা এবং ওয়েবসাইটে স্পন্সরদের উল্লেখ থাকবে;
- স্পন্সর স্বীকৃতি প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্পন্সররা ফিফার অফিসিয়াল স্বীকৃতি পাবে;
- হসপিটালিটি রাইটস সংরক্ষণ করবে;
- অ্যামবুশ মার্কেটিং থেকে সুরক্ষা পাবে;
- সরাসরি বিজ্ঞাপন প্রচারের সুযোগের পাশাপাশি ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপ সম্প্রচারমূলক সকল বিজ্ঞাপনে অগ্রাধিকার পাবে
এছাড়াও স্পন্সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মার্কেটিং কৌশল এবং চাহিদা অনুযায়ী তাদের স্পন্সরশীপের চুক্তিপত্র সাজাতে পারে অথবা পরিবর্তন করতে পারে। যেমন তারা চাইলে অফিসিয়াল লোগো ব্যবহার করতে পারে। আবার চাইলে নিজেদের প্রোমোশনের জন্য ফিফার লোগোর সাথে যুক্ত করে আলাদা লোগো তৈরি করতে পারে।
চলুন এবার জানা যাক বেশ কিছু আলোচিত স্পন্সর প্রতিষ্ঠান নিয়ে-
অ্যাডিডাস
অ্যাডিডাস হল একটি জার্মান বহুজাতিক এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্পোর্টসওয়্যার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান৷ রুডলফ ড্যাসলার এবং অ্যাডলফ ড্যাসলার ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এটি। ব্র্যান্ডটি তাদের দারুণ সব জুতোর জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত। ১৯৭০ সাল থেকে অ্যাডিডাস ফিফার সাথে তার অফিসিয়াল অংশীদার হিসাবে যুক্ত আছে। দীর্ঘ ৫২ বছর ধরে অ্যাডিডাস ফিফা বিশ্বকাপ ম্যাচের জন্য অফিশিয়াল ম্যাচ বল সরবরাহ করে আসছে। এছাড়া এইবার প্রতিষ্ঠানটি সাতটি দেশকে অফিশিয়াল কিট স্পন্সর করবে। ফিফা বিশ্বকাপ ছাড়াও, অ্যাডিডাস অন্যান্য সকল ফিফা কার্যাবলীর সাথেও জড়িত, যেমন ফিফা মহিলা বিশ্বকাপ, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ কাতার ২০১৯, ফিফা
অনূর্ধ্ব-২০ এবং মহিলা এবং পুরুষদের জন্য অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ। আর এজন্য প্রতিটি ইভেন্টের জন্য ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে খরচ করছে অ্যাডিডাস।
ফিফার মিশন ‘ডেভেলপ দ্য গেইম, টাচ দ্য ওয়ার্ল্ড, বিল্ড এ বেটার ফিউচার’ -এর সাথে সম্পূর্ণভাবে একাত্মতা প্রকাশ করে অ্যাডিডাস। সারা বিশ্বে ফুটবল সহ অসংখ্য সেলফ ডেভেলপমেন্টাল কোর্স এবং কর্পোরেট সোশ্যাল রেস্পন্সিবিলিটি পূরণে পণ্য সরবরাহ করে সক্রিয়ভাবে এই মিশনে অবদান রাখছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
কোকা-কোলা
কোকাকোলা কোম্পানি হল ফিফার অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার, যারা ১৯৭৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিফা বিশ্বকাপের অফিশিয়াল স্পন্সরশীপের দায়িত্ব পায়। তার আগে কোকা-কোলা ১৯৫০ সাল থেকেই প্রতিটি ফিফা বিশ্বকাপে স্টেডিয়ামে অনানুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেদের প্রচারণা করতো। এছাড়াও ২০০৬ সাল থেকে, তারা একচেটিয়াভাবে ‘ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ট্রফি ট্যুর’ পরিচালনা করছে যার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ফুটবলপ্রেমী চমৎকার গোল্ডেন ট্রফিটি দেখার সুযোগ পেয়ে আসছে। ২০১৮ সালের ফিফা বিশ্বকাপ ট্রফি ট্যুর রাশিয়া থেকে বিশ্বের ৫১টি দেশের ৯০টি শহরে ৯ মাস ভ্রমণ করে এবং টুর্নামেন্ট এর শুরুতে রাশিয়ায় ফিরে আসে এবং বরাবরের মতই এটির দায়িত্বে ছিল কোকাকোলা। চলতি বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশাপাশি, ওমান, বাহরাইন, কুয়েত এবং লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ঘুরে আয়োজক দেশ কাতারে পৌঁছাবে বিশ্বকাপ ট্রফিটি। পাশাপাশি এইবার‘ইওর ড্রিমস’ নামে একটি নতুন ক্যাম্পেইন ও চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই ক্যাম্পেইনে ফুটবল কিংবদন্তিরাও অংশ নেবেন ট্রফি সফরে এবং সাক্ষাৎ করবেন তাদের ভক্তদের সাথে। কোকাকোলা ফিফার স্পন্সরশিপে প্রতিটি ইভেন্টের জন্য খরচ করে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ওয়ান্ডা গ্রুপ
২০৩০ সাল পর্যন্ত ফিফার স্পন্সর হিসেবে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে চীনা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ওয়ান্ডা গ্রুপ। আর এই চুক্তিটি ধারণা করা হচ্ছে । চুক্তি অনুযায়ী চায়না ও সারা বিশ্বের নির্দিষ্ট সংখ্যক শিশু সুযোগ পায় “ফিফা ফ্ল্যাগ বিয়ারার প্রোগ্রাম’-এ অংশগ্রহণ করার। স্ট্যান্ডার্ড রাইট প্যাকেজের সুবিধাগুলো ছাড়াও ওয়ান্ডা গ্রুপ ফিফার অফিশিয়াল মাসকট ব্যবহার করা থেকে শুরু করে ফিফার সাথে যুক্ত হয়ে চায়নাতে ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট নিয়েও কাজের সুযোগ পায়।
হুন্দাই/কিয়া
হুন্দাই ১৯৯৯ সালে ফিফার সাথে ১৩টি ফিফা প্রতিযোগিতা স্পন্সর করার চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে চুক্তিটির মেয়াদ ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল, যেখানে হুন্দাইয়ের সহপ্রতিষ্ঠান কিয়া, প্রথম তাদের ফুটবল স্পন্সরশীপ কার্যক্রম শুরু করেছিল। ২০১০ থেকে ২০২২ এই দীর্ঘ সময়ের জন্য হুন্দাই/কিয়া আবারো ফিফার সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে। সেখানে ঠিক করা হয় ২০১৪ তে চলতি চুক্তি শেষ হওয়ার পর যদি হুন্দাই ফিফাকে প্রতি বছর ৩৫ মিলিয়ন দিয়ে থাকে, তাহলে নতুন ডিল অনুযায়ী তারা ফিফাকে পরবর্তী ৮ বছরে ২৮০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করবে। এই স্পন্সরশীপ প্যাকেজে ফিফা মহিলা বিশ্বকাপ সহ সমস্ত ফিফা প্রতিযোগিতার জন্য প্রচার প্রচারণার অধিকার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
- ফিফা মহিলা বিশ্বকাপ
- ফিফা অনূর্ধ্ব-২০
- অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট
- ফিফা বিচ সকার
বাডওয়েজার
বাডওয়েজার বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সুপরিচিত অ্যালকোহলিক বেভারেজ ব্র্যান্ডগুলোর একটি। ব্র্যান্ডটি ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বাডওয়েজার ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিফা বিশ্বকাপের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। আর এবছর ফিফার অফিশিয়াল পার্টনার হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি খরচ করছে প্রায় ৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বাইজুস
বাইজু হল ভারতের বৃহত্তম এড-টেক কোম্পানি। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানিটি ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২-এর প্রথম ভারতীয় অফিশিয়াল স্পন্সর হয়ে ইতিহাস সৃষ্টিকরেছে৷ অফিশিয়াল স্পন্সর হওয়ার জন্য বাইজু প্রায় ৪ কোটি মার্কিন ডলার দিয়েছে ফিফাকে৷
ক্রিপ্টো ডট কম
ক্রিপ্টো ডট কম, একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ অ্যাপ। ববি বাও, রাফায়েল মেলো, গ্যারি অর এবং ক্রিস মার্সজালেকথলের এই চারজন সিঙ্গাপুরে ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এই প্রতিষ্ঠানটি যেটিকে দ্রুততম ক্রমবর্ধমান ক্রিপ্টোকারেন্সি প্ল্যাটফর্ম বলা হয় বর্তমানে। সারা বিশ্বে এর চার হাজারেরও বেশি কর্মী রয়েছে৷ ক্রিপ্টো ডট কম ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২-এর অফিশিয়াল স্পন্সরদের একজন। তবে এই স্পন্সরশিপের জন্য তারা মোট কত মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে তা বিস্তারিত জানা যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, পরিমাণটা ২৪ থেকে ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি হবে।
এখন ভিডিওর সবচেয়ে জরুরী বিষয় আর তা হচ্ছে:
একজন মার্কেটিং বা ব্র্যান্ডিং সেক্টরের লোক হিসেবে কোন কোন জিনিসগুলো আপনার জানা দরকার?
১। এবারের ওয়ার্ল্ডকাপের মোট ভিউয়ার্স ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৫ বিলিয়ন, যা পৃথিবীর মোট জনগণের প্রায় শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই কোম্পানিগুলো চাইবে তাদের কোম্পানিকে এই ৫বিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। আর এতো বিশাল পরিমাণের এক্সপোজার পেতে চাইলে ফুটবল ওয়ার্ল্ডকাপের কোন বিকল্প নেই।
২। ওয়ার্ল্ডকাপকে কেন্দ্র করে প্রতিটি কোম্পানি তাদের কোন নতুন সার্ভিস অথবা প্রোডাক্ট নিয়ে আসে, যেমন হুন্দাই তাদের নতুন ইকো ফ্রেন্ডলি গাড়ি IONIQ 5, ভিভোর নতুন ফোন X Fold+ আর এডিডাস তাদের Predator স্যুর ২০০৬ সংস্করণকে পুনরায় নতুন টেকনোলজি আর ফিচার্স যোগ করে মার্কেটে এনেছে। এছাড়া কোকাকোলা, বাইজুস, কাতার এয়ারওয়েজ, ভিসা সবাই তাদের কোন না কোন সার্ভিসকে যুক্ত করছে ওয়ার্ল্ডকাপে প্রমোশনের মাধ্যমে।
৩। সবচেয়ে বড় আর প্রধান সুবিধা হচ্ছে, কোম্পানিগুলো বিভিন্ন টিমের খেলোয়াড়কে নিয়ে ভিডিও, ছবি বা একটিভিটি ক্যাম্পেইন করতে পারে, যা তাদের কমপিটিটরদের থেকে ব্র্যান্ড ভেল্যুকে অনেকাংশেই এগিয়ে নিয়ে যায়।
যদি আমাদের ভিডিওটি ভালো লেগে থাকে, তাহলে লাইক এবং কমেন্ট এবং শেয়ারের মাধম্যে ভিডিওটিকে পৌছে দিন সবার ইউটউব হোমপেজে।
আজকে এপর্যন্তই, টি-২০ বিশ্বকাপের স্পন্সরদের সম্পর্কে জানতে ডান পাশে ফ্ল্যাশ হওয়া লিংকের ভিডিওটি দেখতে পারেন, আর নতুন কোন কেস স্টাডি সম্পর্কে জানতে থাকুন হাউজ অব মার্কেটিং-এর সাথেই।